গবেষণার অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষ্যে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আইআরটি) কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-২ এ অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব এবং সভাপতিত্ব করেন হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. এম. জাহাঙ্গীর কবির এবং কো-অর্ডিনেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআরটি'র পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আলমগীর হোসেন, সঞ্চালনা করেন আইআরটি'র সহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান মন্ডল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, চেয়ারম্যান, প্রক্টর, ছাপনিবিসহ সকল অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি’র সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের মাঝে অনেক ভালো মানের গবেষক আছেন, আমি যেহেতু বর্তমানে ইউজিসি’র এই বিভাগে কর্মরত আছি, তাই বিষয় গুলো জানা আছে। দেশের বাহিরে আমরা যেসব দেশে কাজ করি সেখানে পেটেন্ট করা হয়, কিন্তু দেখা যায় দেশে আসার পর আর প্যাটেন্ট করা হয়না। সেক্ষেত্রে আপনাদের এখানে প্যাটেন্ট হয়েছে, আরেকটা গৃহীত হয়ে আছে এবং আমি মনে করি প্যাটেন্ট হওয়ার মতো আরও অনেক প্রোডাক্ট আপনাদের এখানে আছে। আপনারা ভালো ভালো রিসার্চ করছেন, এরই ধারাবাহিকতায় কাজ করে যাবেন। ইউজিসি’র কাছে আপনাদের বেশ কিছু প্রত্যাশা আছে, এক্ষেত্রে আমরাও আবার প্রত্যাশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিকট। কারণ একটা দেশকে উন্নত করতে চাইলে সেদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। যতো সুন্দর কথাই বলিনা কেন, রিসার্চ করতে গেলে ফান্ডের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সরকার বাজেট না দিলে কি আমরা বসে থাকবো? আপনারা, আমরা কিন্তু প্রফেসর, বিদেশে প্রফেসর হতে গেলে একটা ক্রাইটেরিয়া থাকে, সেটা হলো আপনাকে ফান্ড আনতে হবে। ল্যাবের উন্নয়ন করা, ফান্ড কালেকশন করা, এই বিষয়গুলোতে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা একজন গবেষণা বান্ধব ভাইস-চ্যান্সেলর পেয়েছেন, আশা করি তিনি হাবিপ্রবিকে আরও সানে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. এনামউল্যা বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই বলে আসছি, উত্তরবঙ্গ বৈষম্যের স্বীকার। তিনি বলেন, ইউজিসি’র সদস্য মহোদয় এখানে উপস্থিত আছেন তিনি নিজেই এখন বিষয় গুলো দেখতে পারবেন। বিশেষ করে বিগত বছর গুলোতে হাবিপ্রবি গবেষণা ক্ষেত্রে কতটুকু বাজেট পেয়েছে এটা দেখলেই উনি বুঝতে পারবেন। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ হলো শিক্ষা ও গবেষণা, এক্ষেত্রে আমরা সব সময় বঞ্চিত হয়েছি। আমি গর্ব করে বলতে পারি কৃষিতে বাকৃবি’র পরেই হাবিপ্রবির অবদান অনেক, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, ফিসারিজ, কৃষি এই বিষয়গুলো অনেক ভালো করছে, বাকিরাও পিছিয়ে নেই। অথচ সেই তুলনায় আমাদেরকে বার বার বঞ্চিত করা হয়েছে। আশা করি সম্মানিত প্রধান অতিথি মহোদয় বিষয়গুলো দেখবেন। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের এখানে চলমান কোন প্রজেক্ট নেই অথচ প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়েই কম বেশি প্রজেক্ট চলমান রয়েছে, এদিক দিয়েও আমরা বঞ্চিত। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়া অনেক কঠিন। আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহোদয় এই এলাকারই কৃতী সন্তান, আশা করি সকল বিষয় গুলো তিনি আন্তরিকতার সাথে দেখবেন। পরিশেষে তিনি, ইউজিসি’র সম্মানিত সদস্যসহ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। ।