হালাল ও হেলমেট ল্যাবরেটরির উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
কারখানা ঘুরে দেখছেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট
কারখানা ঘুরে দেখছেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট

শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আজ সোমবার বিএসটিআইতে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত ন্যাশনাল হালাল ল্যাবরেটরি এবং বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র অত্যাধুনিক হেলমেট টেস্টিং ল্যাবরেটরি-এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, শিল্পখাতকে বহুমাত্রিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএসটিআইতে অত্যাধুনিক হালাল টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ন্যাশনাল হালাল ল্যাবরেটরি স্থাপন একটি সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।  এর ফলে রফতানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

এছাড়া বিকেলে এই বিষয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান, এফবিসিসিআই'র সম্মানিত সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রাক্তণ অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ আলমগীর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) এস এম ফেরদৌস আলম। 

আলোচনা সভায় বিশেষ বক্তা হিসেবে শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন, সারা পৃথিবীতেই দিন-দিন হালাল পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এমন বাস্তবতায় বিএসটিআই’র হালাল সার্টিফিকেশনের যাত্রা এবং প্রতিষ্ঠানটিতে ন্যাশনাল হালাল ল্যাবরেটরি স্থাপন একটি সময়োপযুগী সিদ্ধান্ত। এছাড়া তিনি হেলমেট ক্রয়, বিক্রয় এবং ব্যবহারের আগে বিএসটিআই'র লোগো  এবং কিউআরকোড সংযুক্ত কিনা তা যাচাই করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাই।

মোটরবাইকে রাস্তায় চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে শিল্প সচিব বলেন, মানসম্পন্ন হেলমেট বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক পণ্যের অন্তুর্ভক্ত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দেশে মানসম্পন্ন হেলমেট যাচাইয়ের নিজস্ব ল্যাব ছিল না। বিশ্বমানের পরীক্ষণ যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এখন থেকে দেশে উৎপাদিত ও আমদানি করা হেলমেটের মান যাচাই করা যাবে। এটি ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমাতে সহায়তা করবে।

বিএসটিআই’র মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, আজকের বিশ্বে হালাল পণ্যের চাহিদা শুধু মুসলিম দেশেই নয়, বরং গ্লোবাল মার্কেট জুড়ে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। হালাল এখন আর শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতিফলন নয়, এটি একধরনের গ্লোবাল কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ড হয়ে উঠেছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, এবং সচেতন ভোক্তা আচরণের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল হালাল ল্যাব এবং দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ হেলমেট টেস্টিং ল্যাব আমাদের জাতীয় মান অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে আরও সুসংহত করবে। হালাল পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে এবং রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এই উদ্যোগ হবে মাইলফলক। 

উল্লেখ্য যে, ন্যাশনাল হালাল ল্যাবরেটরি উদ্বোধন উপলক্ষে বিএসটিআইতে হালাল পণ্যের শোকেসিং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিএসটিআই হতে হালাল সনদপ্রাপ্ত ১০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। হালাল সনদপ্রাপ্ত রিমার্ক এইচবি লিডিটেড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিডেট, প্রাণ এগ্রো লিমিটেড, আকিজ বেকার্স লিমিটেড, নিউজিল্যান্ড ডেইরী প্রোডাক্টস্, ন্যাসলে বাংলাদেশ পিএলসি, কোকোলা ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড, বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চুয়া ফ্রোজেন ফুডস লিমিটেড প্রতিষ্ঠান শোকেসিং এ অংশ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে বিএসটিআই থেকে প্রথম হালাল সনদ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অলিম্পিক ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড, রিমার্ক এইচবি লিমিটেড এবং কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-কে সনদ প্রদান করা হয়। 

সম্পর্কিত