আইটিইটির আয়োজনে বুটেক্সে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

বুটেক্স থেকে সানজানা শওকত
দোয়া অনুষ্ঠান। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট
দোয়া অনুষ্ঠান। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট

দি ইন্সটিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলোজিস্টস (আইটিইটি) এর আয়োজনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো 'জুলাই আন্দোলন এবং মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির শহিদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল'। ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টায় বুটেক্স অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের ইতিহাস ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সাম্প্রতিক মাইলস্টোন কলেজ ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. জুলহাস উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইটিইটি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক  এ.টি.এম সামসু উদ্দিন খান৷ আরও উপস্থিত ছিলেন আইটিইটির সাবেক মহাসচিব এ কে এম মহসীন আহমেদ, সদস্য সচিব এনায়েত হোসেন, আইটিইটির নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইটিইটি বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক প্রকৌশলী এহসানূল করিম কায়সার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. জুলহাস উদ্দিন বলেন, "জুলাই আন্দোলন কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হলেও তা পরবর্তীতে একটি গণঅধিকার আন্দোলনে রূপ নেয়। পূর্বে দেশে ন্যায্য অধিকার পাওয়া যেতো না, সবক্ষেত্রে বৈষম্য হতো। এই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সেই বৈষম্য থেকে মুক্তির পথ পেয়েছি। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলন নয়, বরং সাধারণ মানুষের একত্রিত প্রচেষ্টা।"

তিনি আরও বলেন, "আইটিইটি একটি নির্দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণতান্ত্রিক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকার আদায়ের পথে কাজ করবে এই আশা ব্যক্ত করছি। পাশাপাশি মাইলস্টোন কলেজ ট্র্যাজেডিতে নিহতদের জন্য গভীর শোক ও মাগফিরাত কামনা করি।"

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইটিইটির যুগ্ম আহ্বায়ক  এ.টি.এম সামসু উদ্দিন খান বলেন, “জুলাই আন্দোলন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদলের ঘটনা। এতে অংশ নেয়া তরুণেরা আমাদের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পথে নতুন আলোর দিশা দেখিয়েছেন। আজকের প্রজন্মের উচিত তাদের আত্মত্যাগের মূল্যবোধ ধারণ করা।”

অনুষ্ঠানে আইটিইটির সদস্য সচিব এনায়েত হোসেন বলেন, “৯০-এর গণ-আন্দোলনের মতোই জুলাই আন্দোলনও সর্বস্তরের মানুষের জাগরণ ছিল। আমি আশা করি, স্বাধীন বাংলাদেশের আইটিইটি একটি গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকবে।”

আইটিইটি এর সাবেক মহা সচিব এ কে এম মহসীন আহমেদ বলেন, “স্মৃতি ধরে রাখতে হলে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় ইতিহাস থেকে। জুলাই আন্দোলন ও মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। আমরা আমাদের নতুন দেশ বিনির্মাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকবো। তাছাড়া যাতে ভবিষ্যতে জনবহুল স্থানে বিমান প্রশিক্ষণের মত কর্মকাণ্ড না হয় সেই দাবি রাখবো।"

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বকারী প্রকৌশলী এহসানূল করিম কায়সার। তিনি বলেন, “আইটিইটি  যেন কোনো রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াই দেশের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি-দাওয়ার একমাত্র নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম। সে লক্ষ্যে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।”এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আইটিইটির বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক সহ বিভিন্ন সিনিয়র টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারগণ। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও কয়েকজন তাদের জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন।আলোচনা সভা শেষে জুলাই আন্দোলনে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং মাইলস্টোন কলেজ ট্র্যাজেডিতে নিহতদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রকৌশলী মোঃ খালিদুল ইসলাম মিথুন, প্রকৌশলী মোঃ আসিফুল আলম, প্রকৌশলী মোঃ মইদুল ইসলাম মঈদ এবং আইটিইটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।

সম্পর্কিত